মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ, ২০২৫
04 Mar 2025 05:53 am
![]() |
পীরগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধিঃ- রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ চিকিৎসকসহ শতাধিক পদ শুন্য থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়িত।প্রতিদিন তাই দুর দুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে এসে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন।এদিকে যে সব চিকিৎসক রয়েছেন,তারাও রোজ বিলম্বে এসে দুপুরেই ফিরে যাচ্ছেন।
কনসালটেন্টরা ১১ টায় এসে ১২ টার পরপরই চলে যান।যে কারনে গোটা স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনায় একটা হযবরল অবস্থা বিরাজ করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় এসব দেখা শোনার কেউ নেই!
কর্তৃপক্ষ জানান, হাসপাতালটি ২০১১ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়।
আসবাবসহ আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতিও সরবরাহ করা হয়েছে। তখন নিয়োগ দেয়া হয় একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।অথচ বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ১১ জন। এক সময় এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরি প্রসূতি সেবা(ইওসি) কার্যক্রমের আওতাভুক্ত হলেও এখন তা নেই। ফলে ঝুঁকি নিয়ে ৪৮ কিলোমিটার দুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয় প্রসুতিদের। কাগজে-কলমে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের ১৬টি পদের বিপরীতে দশ জন থাকলেও পীরগঞ্জে কর্মরত সাত জন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ জুনিয়র কনসালট্যান্ট মেডিসিন, গাইনি, শিশু, অর্থোপেডিক, কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞসহ ইএমও, আইএমও, এক সহকারি সার্জন ও দু’জন মেডিকেল অফিসার আছেন। তবে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি), অ্যানেস্থেশিয়া, ফিজিক্যাল মেডিসিন, চক্ষু, ইএনটি ও চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞসহ এক সহকারি সার্জন, এ্যানেসথেটিষ্ট, এক মেডিকেল অফিসার, ডেন্টাল সার্জন, মেডিকেল অফিসার ইউনানিসহ চিকিৎসক নেই। এছাড়াও ১৬টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র্রের ৯টি মেডিকেল অফিসার পদে আছেন চারজন ও ৭টি সহকারি সার্জনের পদে আছেন তিনজন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালে রোগীদের ভীড় বাড়ছে। আরএমও না থাকায় রায়পুর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারি সার্জন ডাঃ তারিকুল ইসলাম মন্ডল কে এখানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, দায়িত্বরত আরএমওসহ চারজন ছাড়া বাকি সকলে রংপুর ও বগুড়া জেলা সদর থেকে যাতায়াত করেন।
পদ শুন্য থাকায় ইউনিয়ন সেবাকেন্দ্রগুলোয় চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। ৫৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ৫৪ জন সিএইচসিপি থাকলেও কাঙ্খিত সেবা মিলছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তিনটি ওয়ার্ড বয়ের পদ থাকলেও আছেন দু’জন। পাঁচজন এমএলএসএসের স্থলে কর্মরত আছেন তিনজন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাসুদ রানা জানান, চিকিৎসক সংকটে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি সদ্য যোগদান করেছেন। এই হাসপাতালে রোগীদের উপচেপড়া ভীড় দেখছেন প্রতিনিয়ত।হাসপাতালটি ১০০ শয্যা করা জরুরী, মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারি ৫৫ পদের ৩৩টি শুন্য থাকায় রুটিন ইপিআই কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
অ্যাসিষ্ট্যান্ট মেডিকেল অফিসার ১০টি, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট দুটি,ফার্মাসিষ্ট দুটি, সহ-স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাতটি,স্বাস্থ্য পরিদর্শক তিনটি, অফিস সহায়ক আটটি,পরিছন্নতাকর্মী তিনটি,নিরাপত্তা প্রহরী দুটি,বাবুর্চি দুটি, আয়া একটি, জুনিয়ার মেকানিকসহ ৯৮জনের পদ শুন্য রয়েছে। গাইনী চিকিৎসক থাকলেও অ্যানেস্থেশিয়া না থাকায় সিজার করা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।অবশ্য চিকিৎসকদের কর্মস্থলে না থাকার বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা,পীরগঞ্জ,রংপুর